বাক্যকে উদ্দেশ্য ও বিধেয় – এই দুই অংশে ভাগ করা যায়। বাক্যে যাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য বলে। যেমন – সুমন বল খেলে।’ এই বাক্যে সুমনকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হচ্ছে। অতএব সুমন বাক্যটির উদ্দেশ্য। বাক্যে উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয়, তাকে বিধেয় বলে। বিধেয় অংশে সাধারণত ক্রিয়া থাকে। এখানে বল খেলে অংশটি বাক্যের বিধেয়। বাক্য দীর্ঘতর হলে উদ্দেশ্য ও বিধেয় অংশের সঙ্গে নানা ধরনের শব্দ ও বর্গ যুক্ত হতে পারে। উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে এইসব শব্দ ও বর্গ প্রসারিত করে বলে এগুলাের নাম প্রসারক। এছাড়া বিধেয় ক্রিয়ার বিশেষ্য অংশকে বলা হয় পূরক। যেমন –
সেলিম সাহেবের ছেলে সুমন গাছতলায় বসে বই পড়ছে। এখানে সুমন’ উদ্দেশ্য, ‘সেলিম সাহেবের ছেলে’ উদ্দেশ্যের প্রসারক। অন্যদিকে পড়ছে বিধেয়ের ক্রিয়া, ‘গাছতলায় বসে বিধেয়ের প্রসারক এবং বই’ হলাে বিধেয়ের পূরক। তবে উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের এই অবস্থান বদলে যেতে পারে। যেমন –
চিনি বা শর্করা এইসব মিলিয়ে তৈরি হয়। এই বাক্যকে এভাবেও লেখা যেতে পারে –
এইসব মিলিয়ে তৈরি হয় চিনি বা শর্করা। উপরের প্রথম বাক্যে উদ্দেশ্য চিনি বা শর্করা প্রথমে বসেছে, বিধেয়ের প্রসারক এইসব মিলিয়ে মাঝখানে বসেছে, এবং বিধেয় ক্রিয়া তৈরি হয় শেষে বসেছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় বাক্যে উদ্দেশ্য চিনি বা শর্করা’ শেষে বসেছে, বিধেয়ের প্রসারক ‘এইসব মিলিয়ে প্রথমে বসেছে, এবং বিধেয় ক্রিয়া তৈরি হয়’ মাঝখানে বসেছে। সাধারণত উদ্দেশ্যের পূর্বে উদ্দেশ্যের প্রসারক এবং বিধেয়ের পূর্বে বিধেয়ের প্রসারক বসে। তবে বিধেয়ের স্থান ও কাল সংক্রান্ত প্রসারক উদ্দেশ্যের পূর্বেও বসতে পারে। যেমন –
১৯৫২ সালে ঢাকার রাজপথে বাঙালি জাতির অহংকার রফিক-সালাম-বরকত-জব্বার মাতৃভাষার
জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই বাক্যে উদ্দেশ্য হলাে রফিক-সালাম-বরকত-জব্বার’, উদ্দেশ্যের প্রসারক হলাে বাঙালি জাতির অহংকার’। বিধেয় ক্রিয়া হলাে উৎসর্গ করেছিলেন, বিধেয়ের পূরক হলাে জীবন। অন্যদিকে ১৯৫২ সালে, ‘ঢাকার রাজপথে, এবং মাতৃভাষার জন্য – এই তিনটি অংশ হলাে বিধেয়ের প্রসারক।
অনুশীলনী
১. বাক্যের দুই অংশ –
ক. উদ্দেশ্য ও কর্তা
খ. বিধেয় ও কর্ম
গ. উদ্দেশ্য ও বিধেয়
ঘ, উদ্দেশ্য ও কর্ম
২. বাক্যে উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয় তাকে কী বলে?
ক. উদ্দেশ্য
খ. বিধেয়
গ. পূরক
ঘ. প্রসারক
৩. বাক্যে যাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হয়, তাকে কী বলে?
ক. উদ্দেশ্য
খ. বিধেয়
গ. পূরক
ঘ. প্রসারক
৪. উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে প্রসারিত করা হয় যেসব শব্দ ও বর্গ দিয়ে, তাকে বলে –
ক. উদ্দেশ্য
খ. বিধেয়
গ. পূরক
ঘ. প্রসারক
৫. বিধেয় ক্রিয়ার বিশেষ্য অংশকে বলে –
ক. উদ্দেশ্য
খ. বিধেয়
গ. পূরক
ঘ. প্রসারক
৬. বাংলা বাক্যে উদ্দেশ্য কোথায় বসে?
ক. বাক্যের শুরুতে
খ. বাক্যের মাঝে
গ, বাক্যের শেষে
ঘ, যে কোনাে জায়গায়
৭. ‘এইসব মিলিয়ে তৈরি হয় চিনি বা শর্করা’ – এখানে এইসব মিলিয়ে বর্গ হলাে –
ক. উদ্দেশ্য
খ. বিধেয়
গ. উদ্দেশ্যের প্রসারক
ঘ. বিধেয়ের প্রসারক
৮. বিধেয়ের স্থান ও কাল সংক্রান্ত প্রসারক বসতে পারে –
ক. উদ্দেশ্যের পূর্বে । |
খ. বিধেয়ের পূর্বে
গ. উদ্দেশ্যের বা বিধেয়ের পরে
ঘ. উদ্দেশ্যের বা বিধেয়ের পূর্বে
৯. মােঘল সম্রাট শাজাহান তাঁর ভালােবাসার নিদর্শন স্বরূপ তাজমহল নির্মাণ করেন – এখানে মােঘল সম্রাট কী?
ক. উদ্দেশ্যের প্রসারক
খ. বিধেয়ের প্রসারক
গ. বিধেয়ের পূরক
ঘ. বিধেয়ের ক্রিয়া
১০. যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, তাদের ঋণ আমরা শােধ করতে পারব না’ – এখানে ঋণ কী?
ক. উদ্দেশ্যের প্রসারক
খ. বিধেয়ের প্রসারক
গ. বিধেয়ের পূরক
ঘ. বিধেয়ের ক্রিয়া
This article is written by :
University of Rajshahi
FOUNDER & CEO OF NAHID24
Follow him on Facebook, Instagram, Youtube, Twitter, Linkedin